My School.

Home About Class Contact Sign in Sign up
Home

Courses

News

Blog

Shop

Advertisement


Top Users

  a ...   317 points

  s ...   109 points

  a ...   48 points

  a ...   34 points

  b ...   23 points

  m ...   20 points

  e ...   18 points

  a ...   17 points

  m ...   13 points

  r ...   11 points

মহাবিস্ফোরণ


  82

  12 Dec 2020

  77   views


Single Content


মহাবিস্ফোরণ

মুসা আহমেদ আকিব

 

মহাজাগতিক ইতিহাসের সবচেয়ে অসাধারণ ঘটনাটা ঘটেছিল আজ থেকে ১৪ বিলিয়ন (১৪,০০০,০০০,০০০) বছর আগে। সেসময় একটা ফুলস্টপের (.) এক ট্রিলিয়ন ভাগের এক ভাগের চেয়েও কম জায়গা জুড়ে আবদ্ধ ছিল মহাবিশ্বের সবটুকু স্থান, শক্তি এবং পদার্থ! অনেক ক্ষুদ্রই বটে, তবে ছোটকে ছোট বলে জ্ঞান করার কোনো উপায় নেই। প্রচন্ড উত্তপ্ত এই বিন্দুর বিস্ফোরণের ফলে ভিতর থাকা সব কিছু চারিদিকে ছড়িয়ে পড়তে থাকে, জন্ম নেয় আমাদের মহাবিশ্ব! এই বিস্ফোরণের ঘটনাকে বলে বিগ ব্যাং বা মহাবিস্ফোরণ। এ এমন এক বিস্ফোরণ যা না হলে আমাদের অস্তিত্বই অসম্ভব ছিল। আপনার মনে প্রশ্ন জাগাই স্বাভাবিক, সেই বিন্দুটা এসেছিল কোথা থেকে? আমরা জানি না, মহাবিস্ফোরণের আগের কোনো কিছুই আমরা জানি না। সময়ের শুরুই হয়েছিল মহাবিস্ফোরণের পর থেকে। এর আগের সবকিছুই আমাদের জন্য বিরাট এক রহস্য, যার উত্তর আধুনিক বিজ্ঞান এখন পর্যন্ত দিতে পারেনি। কিন্তু যেটুকু আমরা জানি, খুব সহজ ভাষায় আপনাদের জানানোর চেষ্টা করবো। তাহলে চলুন শুরু করা যাক, মহাজাগতিক এ যাত্রায় আপনাকে স্বাগতম!

 

বিস্ফোরণের পর ০ সেকেন্ড থেকে ১০-৪৩ (০.০০০০০০০০০০০০০০০০০০০ ০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০১) পর্যন্ত সময়কে বলা হয় প্ল্যাংকের যুগ। এই অসম্ভব ক্ষুদ্র সময়ের মধ্যে মহাবিশ্বের সম্প্রসারণ ঘটেছে ১০-৩৫ (দশমিকের পর ৩৪ শুন্য তারপর ১) মিটার। এই যে অতিক্ষুদ্রতা, যাকে প্ল্যাংকের যুগ বলছি, এই সময়টুকু ব্যাখা করার মতো পদার্থবিজ্ঞানের কোনো নিয়ম আমরা জানি না। আগেই বলছি, তখন সব শক্তি বা বল একসাথে ছিল (৪টি মৌলিক বল)। এই সময়ের শেষ দিকে এসে মহাকর্ষ বল অন্য সব বল থেকে আলাদা হয়ে যায়, আর তারপর থেকেই পদার্থবিজ্ঞান সব খুব সুন্দরভাবে ব্যাখা করতে পারে! ১০-৩৫ সেকেন্ড পর থেকে শক্তির ঘনত্ব কমে আসতে থাকলো, অর্থাৎ শক্তিগুলো আলাদা হতে থাকলো। একত্রিত বল যেগুলো ছিল (মহাকর্ষ বল আগেই আলাদা হয়ে গেছে) সেগুলো আলাদা হয়ে আরো ৩ টি মৌলিক বল তৈরি হলে- সবল নিউক্লিয়ার বল, দুর্বল নিউক্লিয়ার বল এবং বিদ্যুৎ চুম্বকীয় বল। মহাকর্ষ সহ এই চারটি মৌলিক বলের অস্তিত্বই আজ পর্যন্ত পাওয়া গিয়েছে। বিস্ফোরণের এক সেকেন্ডের ট্রিলিয়ন ভাগের এক ভাগ সময় পর দেখা গেল ফোটনগুলো (আলোর কণা। আলো একই সাথে তরঙ্গ এবং কণা!) পদার্থ-প্রতিপদার্থ যুগলে পরিণত হয়ে নিজেদের সংস্পর্শে এসে আবার ফোটনে পরিণত হচ্ছে। প্রতিপদার্থ সম্পর্কে এইটুকু ধারণা দেই যে, কোনো পদার্থ তার প্রতিপদার্থের সংস্পর্শে আসলে বিস্ফোরণ ঘটে, থাকে শক্তি।

 

মহাবিস্ফোরণ

 

ফোটন তার প্রতিপদার্থ এর সংস্পর্শে এসে যে আবার ফোটনে ফিরে আসে এই ব্যাপারটা কিন্তু আইনস্টাইনের E=mc2 সুত্র মেনে হয়। বলগুলো আলাদা হয়ে যাওয়ার কিছুটা আগে থেকে মহাবিশ্বে ছিল কোয়ার্ক, লেপ্টন, তাদের যুগল প্রতিকণা এবং বোসন যার কাজ ছিল বাকিগুলোর মধ্যে অবস্থান্তর প্রক্রিয়া ঘটানো। এই ফাকে বলে রাখি ফোটন এক ধরনের বোসন কণা। এই সময়টাকে আমরা বলতে পারি কোয়ার্ক- লেপ্টন যুগ। এই সময়ে মহাবিশ্বের ঘনত্ব ছিল অনেক বেশি। কণাদের আচরণ এই সময় ছিল কিছুটা জটিল তাই আমরা আপাতত বিষয়টা এড়িয়ে যাব। তবে আগ্রহীরা ইন্টারনেটে দেখে নিতে পারেন! যাইহোক, বলগুলো আলাদা হতে থাকলে দেখা গেল, প্রতি ‘এক বিলিয়ন একটা’ পদার্থের প্রতিপদার্থ ‘এক বিলিয়ন’ অর্থাৎ একটা পদার্থ বেশি। ‘মাত্র একটা’ পদার্থ বেশি প্রতিপদার্থের চেয়ে। বিগ ব্যাং এর পর আমার মতে সবচেয়ে অসাধারণ ঘটনা এটাই! এই বেঁচে যাওয়া একটা পদার্থই প্রতিপদার্থের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হতে পারতো না, বাকি বিলিয়ন পদার্থ বিলীন হয়ে যেত।

 

১ সেকেন্ডের মিলিয়ন ভাগের এক ভাগ সময় যখন পার হলো তখন দেখা গেল মহাবিশ্বের তাপমাত্রা আর ঘনত্ব কমে আসছে। ফলে নতুন একধরণের ভারী স্থায়ী কণা তৈরি হল, যার নাম হ্যাড্রন (বলে রাখি প্রোটন, নিউট্রন একধরণের হ্যাড্রন)। কোয়ার্ক- লেপ্টন যুগ শেষ হলো, শুরু হলো হ্যাড্রন যুগ। হ্যাড্রন যুগে দেখা গেল আগের মতো প্রতি বিলিয়ন হ্যাড্রন প্রতিহ্যাড্রনের সংঘর্ষে একটা করে হ্যাড্রন বেঁচে যাচ্ছে। আমাদের এই সূর্য, গ্রহ-নক্ষত্র, গ্যালাক্সি, যা দেখি এবং দেখি না সবকিছু জন্মের মূল উৎস হিসেবে এই বেঁচে যাওয়া হ্যাড্রন কাজ করেছে। একটু কল্পনা করা যাক হ্যাড্রন-প্রতিহ্যাড্রনের সংঘর্ষে কোনো হ্যাড্রনই বাঁচলো না, সবকটাই বিলীন হয়ে গেল। এমন ঘটনা ঘটলে দেখা যেত মহাবিশ্বে আলো ছাড়া আর কিছুই নেই (যাক একটা হ্যাড্রন বেঁচে যেত প্রতি বিলিয়নে!)। একদম শুরু থেকে যা কিছু বললাম, এখন পর্যন্ত ঘটনাগুলো ঘটতে সময় লেগেছিল মাত্র ১ সেকেন্ড! নিঃসন্দেহে ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ১ সেকেন্ড! কোয়ার্ক এবং হ্যাড্রনের বেলায় যেরকম পদার্থ প্রতিপদার্থের সংঘর্ষ এবং প্রতিবার একটি করে পদার্থ বেঁচে যাওয়া দেখা গিয়েছিল, ইলেকট্রনের ক্ষেত্রেও তাই দেখা গেল (ইলেক্ট্রেনের প্রতিকণা পজিট্রন)। প্রোটনের সাথে যুক্ত হওয়ার মতো ইলেকট্রন বেঁচে গেল। মহাবিশ্ব কিন্তু এই সময় একই সাথে প্রসারিত এবং শীতল হচ্ছিলো।

 

মহাবিস্ফোরণ

 

প্রোটনের সাথে নিউট্রন যুক্ত হয়ে নিউক্লিয়াস তৈরি হচ্ছিলো। এই সময় তৈরি হয় হাইড্রোজেন, হিলিয়াম এবং লিথিয়াম এর নিউক্লিয়াস। পুরা ব্যাপারটা ঘটে বিগব্যাং এর প্রথম দুই মিনিটে! এত এত ঘটনা মাত্র ঘটেছে দুই মিনিটে। তাই আপনি ভাবতেই পারেন এর পরের প্রতিটা সেকেন্ডেই হয়তো অনেক কিছু ঘটেছিল। কিন্তু সেই প্রথম দুই মিনিট পার হওয়ার ৩৮০,০০০ বছর পর্যন্ত কিছুই ঘটেনি। এরপর মহাবিশ্বের তাপমাত্রা নেমে আসলো ৩০০০ ডিগ্রি কেলভিনে। বেঁচে যাওয়া যেসব ইলেকট্রন এলোমেলোভাবে ছুটছুটি করছিলো তারা বাধা পরলো নিউক্লিয়াসের বাধনে। গঠিত হলো পরমানু, আলোয় ভুবন ভরে উঠলো, সূচনা হলো নতুন এক মহাবিশ্বের যেখানে আছে পরমাণু।

 

তারপরের বিলিয়ন বছরে মহাবিশ্ব সম্প্রসারিত হয়েছে, মহাকর্ষ তার প্রভাব খাটিয়ে চারদিকের পদার্থগুলোকে বিভিন্ন জায়গায় জমাট বাধিয়ে তৈরি করেছে গ্যালাক্সি। এসব গ্যালাক্সির ভিতর জন্ম নিয়েছে শত বিলিয়ন নক্ষত্র। এই সময়ের নক্ষত্রগুলো ছিল ভারী, আমাদের সূর্যের থেকেও দশগুন ভারী ছিল। নিউক্লিয়ার ফিউশন বিক্রিয়ায় এই নক্ষত্রগুলোতেই তৈরি হয়েছে বিভিন্ন মৌল। এই নক্ষত্রগুলো সুপার নোভা হয়ে বিস্ফোরিত হতে থাকে (নক্ষত্রের বিস্ফোরণ সম্পর্কে অন্য লেখায় আলোচনা করা হবে)। ফলে যেসব রাসায়নিক পদার্থ এদের মাঝে ছিল তা বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পরতে থাকে। আবার সেখান থেকে জন্ম নেয় বিভিন্ন নক্ষত্র। এরপরের গল্পটা নয় বিলিয়ন বছর পরের। নিতান্তই সাধারণ সাদামাটা এক গ্যালাক্সি যার নাম মিল্কিওয়ে তার কালপুরুষের বাহুর মধ্যে জন্ম নিল সাধারণ এক নক্ষত্র। আমরা এই নক্ষত্রকে ডাকি সূর্য বলে! বাষ্পের যে মেঘ থেকে জন্ম নিয়েছিল সূর্য, সেই মেঘ থেকেই বিভিন্ন জটিল প্রক্রিয়ায় জন্ম নিল সৌরজগতের অন্যান্য গ্রহ উপগ্রহ। সেরকমই এক গ্রহ যা পৃথিবীর হিসেবে পরিচিত, তারই এক কোণায় বসে বসে আমি লেখাটা লিখছি আর ভাবছি বিশাল এই মহাবিশ্বের তুলনায় কতটা ক্ষুদ্র আমরা! ১৪ বিলিয়ন বছর আগে পদার্থ-প্রতিপদার্থ এর সংঘর্ষে যদি একটা করে হ্যাড্রন বেঁচে না থাকতো তাহলে আমাদের অস্তিত্বই থাকতো না!

 

মহাবিস্ফোরণ


  12 Dec 2020       77   views

Comment



My Account


Login with Facebook

Forgot Password

Create New Account

Advertisement

  • My School
  • Career
  • Get a Support
  • Affiliate
  • Sitemap
  • Blog
  • Terms of Usage
  • Privacy Policy
  • Pricing & Plan
  • Become a Trainer
  • Facebook
  • YouTube
  • Twitter
  • Instagram
  • website view counter

Join with us with our updated program by subscribing here.


Copyrights © 2020 My School All Rights Reserved.