SSC পরীক্ষার শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি
এসএসসি (SSC) পরীক্ষার শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি
শাহারিয়ার শুভ
২০২০ সালের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার আট সাধারণ বোর্ডের এসএসসি,মাদ্রাসা বোর্ডের দাখিল ও কারিগরি বোর্ডের এসএসসি ও দাখিল ভোকেশনাল পরীক্ষা ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হবে। তাই পরিক্ষার এই কয়েকদিন আগে শেষ মুহূর্তের জন্য কিভাবে নিজের প্রস্তুতি নেওয়া এবং কিছু ছোট খাট ভুলগুলো না করে কিভাবে এই স্বল্প সময় কে কাজে লাগানো যায় সেটাই হল পরীক্ষার আগের কাজ। এবার কাজ গুলো সম্পর্কে বলা যাক তাহলে -
১। রিজার্ভ ডে রাখার চেষ্টা করো!
প্রায় সবসময় এসএসসির প্রথম পরীক্ষা বাংলা প্রথম পত্র থাকে। এরপর বাংলা দ্বিতীয় পত্র। তাই তুমি যখন শেষ মুহূর্তের প্রিপারেশন নিবে, তখন অবশ্যই রুটিনের মধ্যে বাংলা দ্বিতীয় পত্র এবং শেষের কয়দিন বাংলা প্রথম পত্র পড়বে। কারন দুই সাব্জেক্টের মধ্যে ছুটি একদিন। কিন্তু কখনোই শেষ তিন দিন বাংলা প্রথম পত্র পড়ব,এরকম রেখো না। সব পড়া একদিন আগে শেষ করতে হবে। শেষের দিন অনেক টেনশন কাজ করে! ঐ দিন রিজার্ভ ডে হিসেবে রাখবে।
২। টেস্ট পেপার নাকি বই পরবো?
দিন যত আগাতে থাকবে,তত তোমার ঘুমের পরিমাণ সমানুপাতিক হারে বাড়তে থাকবে। কারণ তুমি সব পার! তাই যত পারো টেস্ট পেপার সল্ভ করবে। এরপর টেস্ট পেপারের মধ্যে যেগুলো পারো না বা কঠিন লাগে,সেসব কোথাও লিখে রাখবে যেন পরীক্ষার আগের দিন রিভিশন দিয়ে যেতে পার। যত পার এমসিকিউ সল্ভ করে যাও। ঘুমানোর আগে দুই সেট ঘুম থেকে উঠার পরে দুই সেট। কিন্তু পরীক্ষার আগের দিন বই এর প্রতি ফোকাস বেশী থাকবে। ইম্পরট্যান্ট সূত্র,থিওরী এসব শেষ বারের মতন একবার চোখ বুলিয়ে নিবে যেন বই এর কোন কিছু মিস না যায়। সম্ভব হলে www.bdmyschool.com ওয়েব সাইট থেকে সূত্র বা থিওরীগুলোর ভিডিও গুলো সুন্দর ভাবে দেখানো হয়েছে সেগুলো দেখতে থাকো।
৩। ৭টা সৃজনশীল কিভাবে লিখব?
একটা হিসাব খুবই সহজ,৭টা সৃজনশীল প্রশ্নেই সমান নম্বর। প্রথমটা খুব ভাল করে লিখলা আর শেষের টা জেট প্লেনের গতিতে লিখলে হবে না। সবগুলোই সমান গুরুত্বের সাথে লিখতে হবে। মনে রাখবে, প্রথম পরীক্ষায় একটু ঝামেলা বেশী হয়। নাম,স্কুলের নাম,সাইন অনেক কিছু করতে হয়। তাই ৫ মিনিট কম করে হিসাব করে পরীক্ষা দিতে বসবে। সবচেয়ে ভাল আইডিয়া হল,আমরা সবাই পরীক্ষার প্রথম পাঁচ মিনিট কিছুই করি না,প্রথম থেকেই সমান গতিতে লিখতে হবে।
৪। ম্যাথ পড়ব কিভাবে?
ম্যাথ পড়লে হবে না,ম্যাথ সবসময় একটু হলেও হাতে কলমে লিখে প্র্যাকটিস করতে হবে। ম্যাথে সবসময় খুবই সিলি মিসটেক করে সবাই। তাই একটা ম্যাথ করে সাথে সাথে রিভিশন দিয়ে দিবে। একেবারে লাস্টে রিভিশন দিও না। কারন সৃজনশীলে খ নাম্বার ভুল হলে গ নাম্বারও ভুল হবে। যেটুকু এন্সার করে আসছো,সেটুকু যেন ফুল নাম্বার পাও। আর ম্যাথে এখন বিভিন্ন সেটে যেমন এক সেটে বীজগণিত,এক সেটে জ্যামিতি এভাবে আসে। তাই পরীক্ষার আগেই একটু থিসিস করে যাও কোন কোন সেট আগে এন্সার করবা।
৫। ইংরেজী নিয়ে কি করবো!
ইংরেজীতে দুই টাইপের মানুষ বেশী থাকে,এক হয় খুব ভাল পারে আরেক হয় কিছুই পারে না। যারা খুব ভাল পার তারা ওভার কনফিডেন্স হয়ে যেয়ো না। কিছু খুব সিম্পল নিয়ম কানুন দেখে যেয়ো,যেমন তুমি ইংলিশ খুব ভাল পারো দেখে পাঁচ পৃষ্ঠা প্যারাগ্রাফ লিখলে হবে না। আর যারা পারো না তাদের কোন টেনশন নাই। তোমাদের টারগেট হবে নিজে নিজে কিছু বুদ্ধি বের করা। যেমন তুমি প্যারাগ্রাফ বা এসের জন্য কমন কিছু লাইন শিখে যেতে পার। কিছু কমন উক্তি শিখে যেতে পার। স্টারটিং এন্ড এন্ডিং কিভাবে করবা শিখে যেতে পার। যাতে যেই রচনাই আসুক না কেন তুমি কোন না কোন ভাবে ব্যবহার করতে পার। দেখবা এটা তোমার স্কিল আরো বাড়িয়ে দিবে। শুধু শুধু ১০০টা রচনা মুখস্ত করে কমন পাওয়ার আশা না করাই ভাল। আমি শুধু রাইটিং পার্ট এর কথা বললাম। গ্রামার তুমি পারলে ১ না পারলে ০। বাইনারীর সংখ্যা!
৬। ফিজিক্স-কেমেস্ট্রির সহজ ও কঠিন!
প্রতিবার এস এস সি শেষে শুনা যায়,ভাইয়া আমাদের বার ফিজিক্সে খুব কঠিন প্রশ্ন হয়েছিল,অমুক বার কেমেস্ট্রির কোশ্চেন খুব হার্ড। ধর তুমি পরীক্ষার হলে বসে আছো,ফিজিক্স প্রশ্ন নিয়ে,কোশ্চেন খুব কঠিন আসছে! কি করবা? শূন্যতম নিয়মে ফিরে যাও। তোমাকে হাল ছেড়ে দিলে হবে না। যা করার ঐখানেই করতে হবে,ধর সবচেয়ে যেই প্রশ্নটা একটু ভাল পার,সেইটা দিয়ে আগে শুরু কর। একটা না একটা সহজ প্রশ্ন থাকবেই। বাকী সবকিছু ভুলে যাও। ওটা দিয়ে এন্সার করা শুরু করো। তারপর আরেকটু সহজটা দিয়ে। দেখবা আস্তে আস্তে পরীক্ষাটা সহজ লাগা শুরু করসে। যেটা অনেক কঠিন সেটা সবার শেষে,ওটা সম্পর্কে যা জানো,তাই লিখে দিয়ে আসো। ভুলেও খাতা ফাঁকা রেখে আসবে না। সব প্রশ্নের উত্তর লেখা চাই।
৭। কোন কিছু বাদ না রাখা!
অনেকেই একটা কাজ করে,ম্যাথ,ফিজিক্স এসব সাব্জেক্টে! যে অমুক চ্যাপ্টার পুরা বাদ,পড়ব না। কিন্তু দেখা যায় এমন ভাবে কোশ্চেন আসছে যে ঐখান থেকে উত্তর দিতেই হবে। এটা করা যাবে না। একটা টপিকও বাদ দেয়া যাবে না। যদি একেবারেই না পারো এটলিস্ট আইডিয়া নিয়ে যেয়ো!! কারন সবাই যেটা পারে না সেটা না পারলে সমস্যা নাই,কিন্তু সবাই যেটা পারে,তুমি সেটা না পারলে সমস্যা আছে। অবশ্যই সমস্যা আছে। কিন্তু আবার পরীক্ষার আগের রাতে নতুন করে কিছু পড়তে যেয়ো না।
৮। অনলাইন সহপাঠী!
এখন তো ডিজিটাল যুগ। ধরো রাত ১২টার দিক মনে হল অমুক সূত্র বা থিওরী বুঝতেছ না। কি করবে? অবশ্যই একটা বন্ধুকে ফোন দিয়ে জিজ্ঞাস করবে, দোস্ত এইটা কিভাবে করে। কিন্তু যদি তাও না পারো তাহলে সরাসরি www.bdmyschool.com এর ওয়েবসাইটে চলে যাবে। দেখবে সাথে সাথেই উত্তর পেয়ে গিয়েছো। এছাড়াও শেষ মুহূর্তে নিজের অবস্থা যাচাই করার জন্য এই ওয়েবসাইটে যেই ১০টি পেইড মডেল টেস্ট এক্সাম আছে, যেগুলো ২০ তারিখ থেকে শুরু হবে সেগুলা দিয়ে পারো। কারন মডেল টেস্ট গুলো খুব মান সম্মত এবং সাথে বিগত বছরের কিছু প্রশ্নের আলোকে বানানো। এই ১০টি মডেল টেস্ট দেওয়ার পরে নিজের ভুলগুলো কোথায় হচ্ছে সেটা ঠিকমতো বুঝতে পারবে।
৯। সবশেষে সততাই সর্বকৃষ্ট!
শেষ কথা বলি। পরীক্ষার আগের রাতে দেখবা সাজেশন এর পর সাজেশন আসতে থাকবে। অমুক স্যার এই সাজেশন দিসে,এই প্রশ্ন আসবেই। এসব নিয়ে মাথা ঘামিও না। শুধু মনে রাখবা তুমি যেটা পার সেটাই পরীক্ষায় আসবে,তুমি যেটা পারো না সেটা জীবনেও পরীক্ষায় আসবে না। এই বিশ্বাস টুকু নিজের মতন রেখো।
সকালের পরীক্ষা ১০টা থেকে ১টা পর্যন্ত ও বিকালের পরীক্ষা দুপুর ২টা থেকে ৫টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে। তোমার পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট পূর্বে অবশ্যই কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে আসনে বসতে হবে।
সবশেষে শুভকামনা তোমাদের জন্য ।
এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার রুটিন ২০২০ ছাত্র ছাত্রীদের সুবিধার্থে নিচে তুলে দেওয়া হলোঃ
  07 Dec, 2019       1924   views
অবশেষে স্বাস্থ্যবিধি মেনে খুলছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান  (Post)
অনলাইন কোর্সঃ আপনার স্বপ্নের পেছনে সময় দিন, অযথা সময় অপচয় থেকে দূরে থাকুন  (Post)
ঢাকায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ১২তম আন্তর্জাতিক আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভাল  (Post)
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় গুলির জন্য সম্মিলিত ভর্তি পরীক্ষা এই বছর থেকে শুরু হবে  (Post)
রোববার এসএসসির ফল প্রকাশ  (Post)
More